কওমি শিক্ষার্থীরা সরকারের অধীনে পরীক্ষা বর্জনের আহ্বান জানিয়েছে। শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ জানিয়েছে, তারা এই পরীক্ষায় অংশ নেবে না। অন্যদেরও তারা পরীক্ষায় অংশ নেয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
দাওরায়ে হাদিসের এক শিক্ষার্থী জানান, ভারতের কট্টর হিন্দুত্ববাদী সরকার নরেন্দ্র মোদিকে দেশের স্বাধীনতা সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে নিয়ে আসার বিরোধিতা করায় সরকার কওমি মাদরাসার নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদেরকে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করেছে। তাই এ সরকারের স্বীকৃতি দেয়া বোর্ড আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ এর অধীনে পরীক্ষা দেয়ার মানে হলো আমাদের শহীদ ভাইদের রক্তের সাথে বেইমানি করা।
এভাবেই আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ এর অধীনে দাওরায়ে হাদীস (মাস্টার্স) পরীক্ষা বয়কটের ডাক দিয়েছেন চট্টগ্রামের জামিয়া আহলিয়া দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী, জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া, জামিয়া ইউনুসিয়া, জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া, জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা, জামিয়া ইসলামিয়া মাদানিয়া যাত্রাবাড়ী, লালবাগ মাদরাসা, মিরপুরের জামেউল উলুম, জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়া, মাদানী নগর মাদরাসা, জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম বিশ্বনাথ, আশরাফুল উলুম নারায়ণগঞ্জ, জামিয়া আরাবিয়া হামিউস সুন্নাহ, চুয়াডাঙ্গা জামিয়া ইসলামিয়া, টঙ্গীর জামিয়া সুবহানিয়াসহ বেশ কয়েকটি মাদরাসার শিক্ষার্থীরা।
এ উদ্দেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি গ্রুপ খোলা হয়েছে ‘বয়কট হাইআ’ নামে। সেখানে সক্রিয় হয়ে পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিচ্ছে তারা।
এ বিষয়ে এক মাদরাসাশিক্ষার্থী বলেন, আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ বোর্ডে দাওরায়ে হাদীস পরীক্ষা দেয়া মানে সরকারের অধীনে পরীক্ষা দেয়া নয়। এ বোর্ডের নিয়ন্ত্রণ তো পরিপূর্ণভাবে আমাদের হাতেই রয়েছে। তাই এমন অজুহাতে পরীক্ষা বর্জন বোকামি হবে।
এ বছরে দাওরায়ে হাদীসের এক পরীক্ষার্থী বলেন, আমরা পরীক্ষা অবশ্যই দিবো। তবে আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ এর অধীনে নয়। আমাদের মাদরাসা বা বেফাক বোর্ডের অধীনে।
মাহমুদ আবদুল্লাহ নামে আরেক পরীক্ষার্থী ফেসবুকে লিখেছেন, হাসপাতালের বেডে সহপাঠীদেরকে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রেখে, মেডিকেলের মর্গে প্রিয় বন্ধুদের ক্ষত-বিক্ষত লাশ ফেলে রেখে নিজেদের পরীক্ষা আর পড়াশোনা নিয়ে মগ্ন থাকার মতো মীরজাফরি শিক্ষা আমাদেরকে কবে কোথায় দেয়া হয়েছে?
অতএব আগে শহীদী ভাইদের প্রাণের বদলা চাই।
আহত ভাইদের প্রতি ফোটা রক্তের প্রতিশোধ চাই।
তার আগ পর্যন্ত হাইয়ার পরীক্ষা কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতবি চাই।
মিরপুর জামেউল মাদরাসার একটি লিখিত অঙ্গীকারনামা পাওয়া গেছে। তাতে দাওরায়ে হাদীসের পরীক্ষা বর্জনের বিষয়ে সবাই একমত হয়েছেন।
তবে, কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ বোর্ড আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ তাদের ফেসবুক পেজে পরীক্ষা নির্দিষ্ট সময়ে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।